গীতা আমার জীবন
“গীতার আলোয় আলোকিত হোক সারা বিশ্ব”
“নিষ্ঠা আর শান্তির পথে এগিয়ে চলুক মানব ধর্ম।”
গীতাময়ী শুভেচ্ছা!
এই পবিত্র পথের শুরুতে আপনাকে স্বাগতম, যেখানে আপনি খুঁজে পাবেন শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার অমৃত বাণী, যা প্রতিটি হৃদয়কে আলোকিত করবে। চলুন আমরা জেনে নিই কিছু তথ্য-

শ্রীকৃষ্ণ কে?
তিনি কি আমাদের আমাদের মতো মানুষ? কেন তিনি শ্রেষ্ঠ? কেনই বা তিনি পৃথীবিতে জম্মগ্রহণ করেছিলেন?

অর্জুন কে ?
অর্জুন কি আমাদের মতো সাধারণ মানুষ? নাকি শ্রেষ্ঠ ভক্ত? মহাভারতের শ্রেষ্ঠ যোদ্ধা তিনি ছিলেন?
হারিয়ে যাই গীতার মধ্যে-
যদি গীতার আলোকে জীবনকে পরিচালিত করা যায়, তবে জীবনের সমস্ত দুঃখ আপনিই চুপসে যাবে। এই জড় জগতের প্রতি মোহ আর মায়া আপনা আপনি বিলীন হবে চেতনার জ্যোতিতে। মানব মন খুঁজে পাবে প্রকৃত সুখ, গভীর শান্তি আর অপার দিব্য আনন্দের স্বাদ। তখন জীবনের পথ হবে আলোকিত, কর্ম হবে পবিত্র, আর আত্মা ছুঁয়ে যাবে চিরন্তন সত্যকে।
গীতার মধ্যে উল্লেখিত আরো কিছু ব্যক্তিবর্গ-
ভগবদ্গীতা কেবলমাত্র শ্রীকৃষ্ণ ও অর্জুনের মধ্যেকার এক গভীর দর্শনসমৃদ্ধ সংলাপ নয়, বরং এটি মহাভারতের প্রেক্ষাপটে অবতীর্ণ এক বিশ্বজনীন জীবনদর্শনের উৎস। গীতার প্রতিটি অধ্যায় ও উপদেশ শুধু একটি সময়ের জন্য নয়—এটি সকল যুগ, সকল সমাজ, সকল মানুষের জন্য পথপ্রদর্শক। এই মহৎ গ্রন্থের প্রতিটি স্তরে ছড়িয়ে আছে বহু গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের সরব ও নিঃশব্দ উপস্থিতি, যারা গীতার বক্তব্যকে বাস্তব প্রেক্ষাপটে স্থাপন করেছে এবং শ্রীকৃষ্ণের বাণীকে আরও মর্মস্পর্শী করে তুলেছে।
ধৃতরাষ্ট্রের এক ব্যাকুল প্রশ্ন থেকে গীতার সূত্রপাত, আর সঞ্জয়ের মাধ্যমে আমরা সেই মহাজ্ঞানময় কথোপকথনের শ্রবণ-সুযোগ লাভ করি। গীতার ভাষ্যে আমরা পাই ভীষ্মের অনড় নীতিবোধ, দ্রোণাচার্যের কর্তব্য ও শিষ্যত্বের দ্বন্দ্ব, কর্ণের আত্মত্যাগ, দুর্যোধনের অহংকার, যুধিষ্ঠিরের ধর্মনিষ্ঠা এবং আরও বহু চরিত্রের চিত্রায়ন। এসব চরিত্র কেবল গল্পের অঙ্গ নয়—তারা গীতার শিক্ষা ও চেতনার বহির্প্রকাশ।
শ্রীকৃষ্ণ যখন অর্জুনকে বলেন, “তুমি তোমার ধর্ম পালন করো, ফলের চিন্তা করো না,” তখন সে বাণী শুধুই অর্জুনের জন্য নয়—এটি সেই সকল মানুষের জন্য, যারা জীবনের সংকটে, দ্বিধায়, অথবা অনিশ্চয়তায় পথ হারিয়ে ফেলে। গীতার উল্লেখিত এই সব ব্যক্তিত্ব আমাদের সেই পরিস্থিতিগুলোর জীবন্ত প্রতিমূর্তি, যাদের মাধ্যমে আমরা নিজের ভেতরের সংগ্রাম ও দ্বন্দ্বকেই খুঁজে পাই।
এই চরিত্রগুলোর প্রতিটি আমাদের শেখায়—মানবজীবন কীভাবে দায়িত্ব, দ্বিধা, ভক্তি ও আত্মসমর্পণের সমন্বয়ে গঠিত। গীতার প্রতি শ্লোক যেন একটি আলোকবর্তিকা, আর এসব চরিত্র সেই আলোকে অনুসরণ করার বাস্তব পথচিত্র। তারা আমাদের বোঝায় যে, চরম সংকটেও কেমনভাবে ধর্ম ও কর্তব্যের পথে অবিচল থাকা যায়। গীতা তাই শুধু দর্শন নয়—এটি জীবনের বাস্তব পাঠশালা, যেখানে চরিত্রগুলো আমাদের জীবনের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে।